Set as Homepage

Pages

Sunday, January 24, 2010

বিশ্ব ইজতেমা

বিশ্ব ইজতেমা 

শান্তির দাওয়াত পেঁৗছে যাক সর্বত্র 

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে। কেননা বিশ্ব ইজতেমা এখন পবিত্র হজের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত হিসেবে স্বীকৃত। টঙ্গীর তুরাগ নদীতীরে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের এ সমাবেশে দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলি্লদের সমাবেশ ঘটতে শুরু করেছে অনেক আগে। ইজতেমার আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটেছে শুক্রবার। আজ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে। তীব্র শীতের মধ্যে শামিয়ানা টানিয়ে দেশ-বিদেশের মুসলি্লরা বুজুর্গদের বয়ান শুনছেন। ইজতেমা ময়দানে নানা কষ্ট আছে, কিন্তু সেসব কষ্ট মুসলি্লদের স্পর্শ করতে পারছে না। তারা দুঃখ-কষ্ট সয়ে ইসলামের মর্মবাণী শুনছেন। অন্তঃকরণে ধারণ করার চেষ্টা করছেন সে বাণী। আমল করার চেষ্টা করছেন যেমন, তেমনি অপর মুসলিম ভাইকে ইমান ও আমলের পথে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। ইজতেমা ময়দানে ধনী-গরিব, দেশি-বিদেশি, গ্রাম-শহরের মানুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় করছেন, একত্রে বসে ধর্মীয় বয়ান শুনছেন, একপাতে খাবার গ্রহণ করছেন। বিভেদের পৃথিবীতে ভেদাভেদহীন ইজতেমা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভ্রাতৃত্বের বাণী নিয়ে এসেছে। আজকের পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে ইজতেমা ও তাবলিগ জামাতের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। দেশে দেশে শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে যে সন্ত্রাস চলছে তাতে ইসলামের শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বাণী থেকে মুসলিমরা যেন দূরে সরে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মকে ব্যবহার করার ফলে অনেক ক্ষেত্রে ইসলাম নিয়ে ভুল ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাবলিগ জামাতের দাওয়াতি কার্যক্রম মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে পারে। সুদীর্ঘকালের চর্চায় তাবলিগ জামাত ধর্মপ্রাণ মানুষের পছন্দসই একটি পথ হয়ে উঠেছে। নিজে আমল করে, দাওয়াতের মধ্য দিয়ে অন্যের কাছে ইমান ও আমলের বাণী পেঁৗছে দেওয়ার যে সুমহান দায়িত্ব তাবলিগ জামাত পালন করছে, তা অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে স্বীকৃত। শুধু ধর্মের বাণী প্রচারের জন্যই নয়, তাবলিগ জামাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যেভাবে অহিংস, অরাজনৈতিক পদ্ধতিতে ধর্মপ্রচার করেন, ব্যক্তিগত আচরণে যেমন কোমল ও ভ্রাতৃভাবাপন্ন_ তাও অনুসরণীয় আদর্শ। সমাজের মধ্যে তাবলিগ জামাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যতটা শ্রদ্ধার পাত্র তা বোধকরি অন্যদের ক্ষেত্রে বলা চলে না। আশার কথা, বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে তাবলিগ অনেক জনপ্রিয়। দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা এসব মানুষের নীরব দাওয়াতি কার্যক্রম বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাদের চেষ্টায়ই বিশ্বের সবচেয়ে বড় তাবলিগি সমাবেশ প্রতি বছর টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আয়োজিত হচ্ছে। সরকারসহ নানা প্রতিষ্ঠান বিশ্ব ইজতেমাকে সুন্দর ও সাবলীল করার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সবার সহযোগিতা ও মুসলি্লদের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এ সমাবেশ শিক্ষণীয় আরেকটি দৃষ্টান্ত। শ্রেণী-পেশা-রাজনীতি নির্বিশেষে সব মানুষ আজ আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে নিজেদের ও মানবজাতির কল্যাণে দোয়া করবেন, মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন। ঢাকা শহরের ধর্মপ্রাণ মানুষ আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণকে একটি পবিত্র সুযোগ বলে গণ্য করেন। দলে দলে মানুষ আখেরি মোনাজাতে যোগ দেওয়ার জন্য টঙ্গীর দিকে যাত্রা করেন। রাস্তার ভিড় ঠেলে সমাবেশের সঙ্গে হাত তুলে 'আমিন' ধ্বনি তোলেন। আমরা আশা করব, এ মোনাজাত ও ইজতেমার মধ্য দিয়ে ইসলামের শান্তি এবং ভ্রাতৃত্বের বাণী দিকে দিকে পেঁৗছে যাবে। ধর্মের প্রকৃত মর্মবাণী ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বময়।
// sithy //

No comments:

Post a Comment