ডিজিটাল অর্থ সংগ্রহ, অ্যানালগ বিপত্তি!
শরিফুল হাসান | তারিখ: ১৪-০১-২009
‘সুধী, শুভ নববর্ষ। বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ তেজগাঁও সরকারি হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন। ওই স্কুলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাবেক ছাত্ররা “প্লাটিনাম জুবিলি ফেলোশিপ-২০১০” আয়োজন করতে যাচ্ছে। ২৩ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠান হবে। জিয়া আহমেদ এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ও অর্থ কমিটির আহ্বায়ক। সে কারণে তিনি অনুষ্ঠানটিকে জমজমাট ও সফল করতে সব পিএসটিএন অপারেটরদের কাছ থেকে একটি ভালো অর্থ আশা করছেন। দেশের অন্যান্য মোবাইল অপারেটর ও আইজিডব্লিউর (আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান) মতো বাংলাদেশের পিএসটিএন অপারেটরদের সংগঠন (এপিওবি) এবং এর সভাপতিও সাধ্যমতো টাকা দিতে সম্মত হয়েছেন। এ কারণেই এপিওবি সব পিএসটিএন অপারেটরদের কাছে ন্যূনতম আড়াই লাখ টাকা এবং আঞ্চলিক অপারেটরদের কাছ থেকে উপযুক্ত পরিমাণে অর্থ আশা করছে।’
ই-মেইলে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে এপিওবি বরাবর চেকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলা হয়েছে। ১৪টি পিএসটিএন অপারেটরসহ মোট ২২ জনের কাছে এই মেইল পাঠানো হয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যানকেও মেইলটির সিসি (অনুলিপি) পাঠানো হয়েছে। অর্থাত্ তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। ই-মেইলটি পাঠিয়েছেন লে. কর্নেল (অব.) নিয়াজ-উর-রহিম। তিনি এপিওবির যুগ্ম সচিব এবং ন্যাশনাল টেলিকমের মহাব্যবস্থাপক।
জানতে চাইলে নিয়াজ-উর-রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা ভুল হয়ে গেছে। আমিই এই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ওই স্কুলের অনেকেই আমার বন্ধু। তাই আমি মেইল করে সবাইকে টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান মহোদয় বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই আমরা টাকা তোলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।’
একাধিক পিএসটিএন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এই মেইল পেয়ে চরম বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। কারণ, এমনিতেই পিএসটিএন অপারেটররা নানা সমস্যায় আছে। সেখানে চেয়ারম্যানের একটি অনুষ্ঠানের জন্য আড়াই লাখ টাকা করে চাঁদা আদায় পুরোপুরি অনৈতিক। তাঁরা জানান, ন্যূনতম আড়াই লাখ টাকা দিলে শুধু ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকেই ৩৫ লাখ টাকা আসবে। স্কুলের পুনর্মিলনীতে এত টাকা তো লাগার কথা নয়।
এপিওবির সভাপতি ও র্যাংকস টেলিকমের চেয়ারম্যান রউফ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি নিয়াজ জানে। সে কাউকে না জানিয়ে এটা করেছে। আমি কখনো এই বিষয়ে সম্মতি দিইনি। বিষয়টি আমার জানাও ছিল না। আমরা কাউকে কোনো টাকা দিইনি। দেবও না।’
প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে নিয়াজ-উর-রহিম দাবি করেন, ১২ জানুয়ারি তিনি আরেকটি ই-মেইল করে সবাইকে টাকা দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন। তবে পিএসটিএন অপারেটররা বলেছে, ১২ নয়, তারা ১৩ জানুয়ারি একটি মেইল পেয়েছে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছ থেকে। নিয়াজ-উর-রহিমকে মেইলটি পাঠিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান। তাতে তিনি বলেছেন, না জানিয়ে এভাবে তাঁর নাম ব্যবহার করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদের কার্যালয়ে ফোন করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এরপর তাঁর মোবাইল ফোনে সংক্ষিপ্ত বার্তা (এসএমএস) পাঠিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য জানাতে অনুরোধ করা হয়।
এরপর তিনি ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়াজ ভুল করে এ কাজটি করে ফেলেছে। আমি ওই স্কুলের ছাত্র ছিলাম। নিয়াজ স্কুলের ছাত্রদের সাহায্য করার জন্যই এটি করেছিল। আমি বিষয়টি জেনে তাকে বকাঝকা করেছি। কড়া ভাষায় তাকে ই-মেইল করে বলেছি, এভাবে সে আমার নাম ব্যবহার করতে পারে না। আমি তার কোম্পানির প্রধানকেও মৌখিকভাবে জানিয়েছি যে, সে এই কাজ করেছে। তাকে ই-মেইলটি বাতিল করার জন্য বলেছি। পরে সে দুঃখ প্রকাশ করে সবাইকে ই-মেইল করে বিষয়টি বাদ দিতে বলেছে।’
Thursday, January 14, 2010
Labels:
Nanarokom
Subscribe to:
Post Comments (Atom)

Hmm asolei funny....digital durbug
ReplyDeletedear admin....thankz for trying to make unique blog....u have all qualities to do it....
wish u good luck
ei r natun ki? amader desher officer r ei rokom..
ReplyDelete