
অপারেটিং সিস্টেমের বাজারে মাইক্রোসফটের পদচারণা শুরু সেই আশির দশকে। এমএস-ডস দিয়ে এরা আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হয় খুব সহজেই। বিল গেটস ও তার বন্ধু পল অ্যালেনের সমন্বিত চেষ্টায় গড়ে ওঠে মাইক্রোসফট। দ্রুত তা কমপিউটার বাজারে জনপ্রিয়তা পায়। এমএস-ডস হচ্ছে মাইক্রোসফটের প্রথম সফল পদক্ষেপ। কমপিউটার অপারেট সহজ করার লক্ষ্যে মাইক্রোসফট গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস সহযোগে বাজারে প্রথম আনে MS-DOS (MicroSoft-Disk Operating System) নামের অপারেটিং সিস্টেমের। ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে আসা এই সিস্টেমটি তখনকার বাজারে চলমান অপারেটিং সিস্টেম ম্যাক ওএস-এর একক আধিপত্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিয়েছিল। মাইক্রোসফটের এই অপারেটিং সিস্টেম সবার সামনে নতুন এক জানালা খুলে কমপিউটিংয়ের জগতে দৃশ্য অবলোকনে সহায়তা করায় বিল গেটস এই অপারেটিং সিস্টেমের নাম রাখেন উইন্ডোজ। ধীরে ধীরে মাইক্রোসফটের এই সফল অগ্রযাত্রায় মাইলফলক হিসেবে পাওয়া যায় উইন্ডোজ ৯৫, উইন্ডোজ ৯৮, উইন্ডোজ ২০০০, উইন্ডোজ মিলেনিয়াম (এমই), উইন্ডোজ নিউ টেকনোলজি (এনটি), উইন্ডোজ এক্সপি (এক্সপেরিয়েন্স), উইন্ডোজ ভিসতা ও উইন্ডোজ সেভেন।
নামকরণ
আগে উইন্ডোজ যে বছরে বের করা হয়েছিল সে বছরের নামানুসারে তার নাম রাখা হয়েছিল। যেমন- উইন্ডোজ ৯৫ বের হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। একইভাবে নামকরণ করা হয়েছে ৯৮, ২০০০ ও মিলেনিয়ামের। এক্সপি নামটি এসেছে এক্সপেরিয়েন্স থেকে। কারণ, এক্সপির ইউজার ইন্টারফেস নতুন এক অভিজ্ঞতার জন্ম দেবে বলে মনে করা হয়েছিল। হয়েছেও তাই। ভিসতা বানানো হয়েছিল খুবই আকর্ষণীয় করে। তাই তার নাম দেয়া হয়েছিল ভিসতা, যার অর্থ হচ্ছে দীর্ঘ, সঙ্কীর্ণ দৃশ্য। যেমন- দুই পাশে বৃক্ষশোভিত বীথি। কিন্তু হঠাৎ করে উইন্ডোজ সেভেন নামটা বেছে নিল কেনো মাইক্রোসফট? এই প্রশ্নটা সবার মনে জাগাটাই স্বাভাবিক। অনেকেই হয়ত ভাবছেন, এটি মাইক্রোসফটের রিলিজ দেয়া ৭ম উইন্ডোজ। তাই এর নাম দেয়া হয়েছে উইন্ডোজ সেভেন। আসুন দেখা যাক, আসলে কিসের ভিত্তিতে উইন্ডোজটির এই নাম রাখা হয়েছে। যদি উইন্ডোজের সিরিজের কথা চিন্তা করে সাজানো হয় তবে তালিকাটি হওয়া উচিত- ০১. উইন্ডোজ, ০২. উইন্ডোজ ২, ০৩. উইন্ডোজ ৩, ০৪. উইন্ডোজ ৯৫, ০৫. উইন্ডোজ ৯৮, ০৬. উইন্ডোজ এমই, ০৭. উইন্ডোজ এক্সপি, ০৮. উইন্ডোজ ভিসতা ও ০৯. উইন্ডোজ সেভেন। নাহ! তাহলে তো এই আদলে নামকরণটা ঠিক হচ্ছে না। কারণ এই তালিকা অনুযায়ী উইন্ডোজ সেভেনের নাম উইন্ডোজ নাইন হবার কথা! আসলে উইন্ডোজের ভার্সনের তালিকা করা হয়েছে তাদের NT Kernel-এর ভার্সনের ওপরে ভিত্তি করে। উইন্ডোজ বানানোর প্রথম কারনেলটি ছিল এনটি ৩.৫১। এ কারনেলের ওপর ভিত্তি করে প্রথমদিকের কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম বানানো হয়েছিল। এরপর এনটি ৪.০-এর ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছিল উইন্ডোজ ৯৮ এবং এভাবে উইন্ডোজ ২০০০, এক্সপি, ভিসতা ও সেভেন বানানো হয়েছে যথাক্রমে এনটি ৫.০, এনটি ৫.১, এনটি ৬.০ এবং এনটি ৭.০ কারনেলের ওপর। এভাবেই এনটি বা নিউ টেকনোলজি কারনেল ভার্সন ৭.০-এর কারণে নতুন এ উইন্ডোজের নাম দেয়া হয়েছে উইন্ডোজ সেভেন।
উইন্ডোজ সেভেনের আবির্ভাব

মাইক্রোসফটের একটি অপারেটিং সিস্টেমভিত্তিক প্রজেক্ট, যার নাম ব্ল্যাককম্ব। এর উন্নয়ন করা হচ্ছিল তৎকালীন বাজারে বিদ্যমান উইন্ডোজ এক্সপি ও উইন্ডোজ সার্ভার ২০০৩-কে আরো উন্নত রূপ দিতে। ব্ল্যাককম্বের কাজ বেশ ভালোই এগিয়ে ছিল, কিন্তু তার মাঝে রিলিজ করা হয় নতুন আরেকটি উইন্ডোজ, যার নাম ছিল লংহর্ন। লংহর্নকে বলা হয় ভিসতার প্রি-রিলিজ ভার্সন। এতে ব্ল্যাককম্বের বেশ কিছু ফিচার ছিল। ২০০৬ সালে ব্ল্যাককম্ব প্রজেক্টটির কোডনেম বদলে রাখা হয় ভিয়েন্না এবং ২০০৭ সালে ভিয়েন্নার নাম রাখা হয় উইন্ডোজ সেভেন। উইন্ডোজ সেভেন প্রথম রিলিজ হয় ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে, যার Build নম্বর ছিল ৬৫১৯। এটি ছিল একটি বেটা ভার্সন, যাতে অনেক ফিচার ছিল না। গত ২২ অক্টোবর বের হয়েছে এর ফাইনাল ভার্সন ৬.১ যার বিল্ড নাম্বার হচ্ছে ৭৬০০। হাইব্রিড কারনেলের ওপরে বানানো নতুন এ উইন্ডোজটি IA-32, x86-64 প্লাটফর্ম সাপোর্ট করে। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের পরবর্তী অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এইট বের হবে ২০১২ সালে।

nice article
ReplyDeleteSithy apu....apnar likha gulu onek joos
ReplyDeleteapnar choice ase bolte hoi
aro sundor sundor topic nie post korben ei kamna roilo